সম্পর্কের যত্নে খুঁজে পাই রত্ন

ষষ্ঠ শ্রেণি (মাধ্যমিক) - স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা - | NCTB BOOK
10
10

এই অধ্যায়ে আমরা একধরনের রত্ন খোঁজার (Treasure Hunt) কাজ করব। রত্ন খোঁজার বিষয়টি তো আমরা সবাই জানি, তাই না? রাশি রাশি হীরা, মণি, মানিকা, সোনা, রূপা- এসব রত্ন কোথাও লুকিয়ে রাখা থাকে। তারপর সূত্র (Clue) ধরে ধরে সেসব খুঁজে বের করা হয়। শিশু-কিশোরদের এডভেঞ্চার গল্পে বা জলদস্যুদের কাহিনিতে এমন কত রত্ন খোঁজার কথা আমরা পড়েছি। এই অধ্যায়েও আমরা রত্ন খুঁজব, কিন্তু সেই রত্ন হীরা, মণি, মানিকা নয়; অন্য কিছু, আরো বড় কিছু নেই রত্নগুলোই আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। আমাদের সাথী হয়, সুখে-দুঃখে পাশে থাকে। এই রত্নগুলো হলো আমাদের একে অন্যের সাথে সুন্দর সম্পর্ক।

মানুষ সামাজিক প্রাণী। অন্য মানুষের সাথে আমরা মিলেমিশে থাকি। একে অন্যের সাথে সম্পর্কের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠে আমাদের সামাজিক জগৎ। এই সম্পর্কগুলো বইয়ের ভাষায় আমরা বলি আন্তঃসম্পর্ক। এই অধ্যায়ে আমরা আমাদের এই সম্পর্কগুলো চিহ্নিত করব। আন্তঃসম্পর্কগুলোর সুবিধা ও গুরুত্বগুলো ভেবে বের করব। কখনো কখনো আন্তঃসম্পর্কে চ্যালেঞ্জ বা ঝুঁকি তৈরি হয়। সেই ঝুঁকিগুলো আমরা চিহ্নিত করব। বিশ্বস্ত সম্পর্কের বৈশিষ্ট্যগুলো কী এবং কীভাবে বিশ্বস্ত সম্পর্ক তৈরি ও রক্ষা করতে হয় সেই উপায়গুলো খুঁজে বের করব। আমাদের চারপাশে বা কমিউনিটিতে সেবাকাঠামোগুলো কী আছে তা খুঁজে বের করব। আমরা পরিকল্পনা করব কীভাবে ঝুঁকি মোকাবিলায় বিশ্বস্ত সম্পর্ক কাজে লাগাতে হয়, কীভাবে সেবাকাঠামো থেকে সহায়তা নিতে হয়। পরিকল্পনা করে সেগুলো শ্রেণিতে অভিনয় করে দেখাব। এর পাশাপাশি নিজেদের জীবনে বিশ্বস্ত সম্পর্ক গড়ে তোলার চর্চা করব। আর এসব কিছুই আমরা করব আমাদের অভিজ্ঞতার ব্যবহার করে। এভাবেই আমরা আমাদের আন্তঃসম্পর্ক বা রত্নগুলো চিনে সেগুলো আরও সুন্দর করার পথে এগিয়ে যাব।

আর দেরি নয়। চলো শুরু করা যাক।

 

আমার আন্তঃসম্পর্ক

শ্রেণিকক্ষে আমরা আমাদের আন্তঃসম্পর্কগুলোর ছবি এঁকে বা ছকে দেখাব। এই সম্পর্কগুলো হতে পারে আমাদের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী, বন্ধু-বাস্তব, শিক্ষক ও বিদ্যালয়ভিত্তিক বা অন্য যেকোনো সম্পর্ক।

  • শ্রেণিকক্ষে আন্তঃসম্পর্কের ছবিটি আঁকতে প্রয়োজনে বাবা-মা অথবা অভিভাবকের সাথে আলোচনা করে নিতে পারি। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক আঁকার কাগজ সরবরাহ করবেন অথবা আমরা বাসা থেকে অব্যবহৃত সাদা কাগজ বা ক্যালেন্ডারের উল্টো অংশের সাদা পাতা নিয়ে যেতে পারি।
  • ছবি আঁকতে গিয়ে কিছু বোঝার প্রয়োজন হলে শিক্ষককে জিজ্ঞেস করব। অনেক মানুষের সাথে সম্পর্ক থাকলে যেগুলো বেশি নিবিড় বা নিয়মিত, শুধু সেগুলো এঁকে দেখাতে পারি। ছবি বা ছক ছাড়া অন্যভাবে করতে চাইলেও পারি। যেমন: ছড়া, কবিতা বা গান লিখেও সম্পর্কগুলোকে দেখাতে পারি।
  • শ্রেণিতে আন্তঃসম্পর্কের ছবি আঁকা শেষ করেছি।এবার আমার নিজের আন্তঃসম্পর্কগুলো আঁকার পালা। অপর পৃষ্ঠার ছবিটিতে আমার আন্তঃসম্পর্কগুলো দেখাব। প্রতিটি তীর চিহ্নের পাশে আমার আন্তঃসম্পর্কগুলো লিখি। যেমন: “পরিবার” লেখা বৃত্তের সাথে তীরচিহ্নগুলোতে পরিবারের আন্তঃসম্পর্কগুলো লিখব।

আন্তঃসম্পর্কগুলোর সুবিধা ও গুরুত্ব (কেন এগুলো আমাদের রত্নের মতো)

  •  আমাদের আন্তঃসম্পর্কগুলো তো আমরা জানলাম। আমাদের জীবনে এসব সম্পর্কের সুবিধা ও গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছি। আমার কাছে আন্তঃসম্পর্কের প্রধান গুরুত্বগুলো কী তা অপর পৃষ্ঠার বৃত্ততে লিখি। সব বৃত্তে লেখার পর যদি আরও কিছু লিখতে চাই তাহলে ডায়াগ্রামটির নিচের খালি অংশেও লিখতে পারি:
  • পূরণ করা ডায়াগ্রামটির দিকে তাকিয়ে দেখি। কত গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কগুলো আমাদের জীবনে! প্রতি মুহূর্তে এই সম্পর্কগুলো আমাদের বাঁচিয়ে রাখে, ভালো রাখে। তাই এসব সম্পর্কই আমাদের জীবনের আসল রত্ন বা গুপ্তধন।

আমার সবচেয়ে নিরাপদ ও বিশ্বস্ত সম্পর্ক

  • আন্তঃসম্পর্কের গুরুত্বগুলো আমরা ভেবে বের করেছি। এবার আমরা জানব আমাদের সবচেয়ে নিরাপদ ও বিশ্বস্ত সম্পর্ক বিষয়ে। শুরুতেই আমাদের বিশ্বস্ত সম্পর্কের কয়েকটি ছবি এঁকে নিই।
  •  আমার সবচেয়ে বিশ্বস্ত, সুখ-দুঃখের সাথী, মন খুলে কথা বলতে পারি, বিপদে ভরসা করতে পারি- এমন কয়েকজন মানুষের ছবি এঁকে ফেলি। তিনি হতে পারেন আমার বাবা-মা, দাদা দাদি, নানা নানি, ভাই/বোন, বন্ধু/বান্ধবী, শিক্ষক যে কেউ। অপর পৃষ্ঠায় এমন ৪টি ছবি আঁকতে পারি, কম আঁকলেও চলবে। আমাদের কাছে তাদের তোলা ছবি থাকলে সেগুলো বক্সে আঠা দিয়ে সেঁটে দিতে পারি, তবে সেক্ষেত্রে আগে তাদের অনুমতি নিয়ে নেব।

 

আমার কয়েকজন বিশ্বস্ত মানুষের ছবি 

ছবি তো আঁকা হলো। এবার আমরা একটু ভাবি, কোন গুণ বা বৈশিষ্ট্যের জন্য এঁদের সাথে আমার সবচেয়ে বিশ্বস্ত সম্পর্ক। তাদের কোন আচরণের জন্য তাদের বিশ্বস্ত মনে করছি। কীভাবে আমরা এই সম্পর্ক আরও বিশ্বস্ত ও সুন্দর করে তুলতে পারি। শ্রেণিতেও আমাদের সাথে নিয়ে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। সেসবের আলোকে নিজে ভেবে অপর পৃষ্ঠার ছকটি পূরণ করি।

  •  এই বিশ্বস্ত সম্পর্কগুলো হলো আমাদের সব রত্নের সেরা রত্ন, সেরা গুপ্তধন। তাই এগুলোর যত্ন নিতে হবে। এসব সম্পর্ক আরও সুন্দর করার জন্য চেষ্টা করতে হবে।

 

আন্তঃসম্পর্কের ঝুঁকি বা চ্যালেঞ্জ

  • এতক্ষন পর্যন্ত আমরা জানলাম সম্পর্কের সুবিধা ও গুরুত্ব। তবে কখনো কখনো সম্পর্ক থেকে ঝুঁকি বা চ্যালেঞ্জও তৈরি হতে পারে। কখনো সেই ঝুঁকি হতে পারে অপরিচিত মানুষ দ্বারা; আবার কখনো আমাদের চেনা-জানা মানুষ থেকেও হতে পারে। এমনকি পরিবার, আত্মীয় বা প্রতিবেশী থেকেও হতে পারে। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক আমাদের দলে ভাগ করে এ রকম কয়েকটি ঝুঁকির কেস/ঘটনা পড়তে দিয়েছিলেন। আমরা শ্রেণিতে উপস্থাপনও করেছি। নিচে ঘটনা বা কেসগুলো দেওয়া হলো। ঘটনাগুলো পড়ি এবং নিজের মতো করে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করি।

ঘটনা - ১ 

অনন্যা ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। প্রতিদিন সে স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে তার এলাকার একটি ছেলে তাকে উত্ত্যক্ত করে, অশোভন মন্তব্য করে। তার খুব ভয় কাজ করে, হাত-পা কাঁপে, সে একা চলাফেরা করতে পারে না, মনে হয় কেউ তাকে অনুসরণ করছে। সে খুব অনিরাপদবোধ করে এবং আতঙ্ক লাগে যে ছেলেটা যদি তার কোনো ক্ষতি করে। সে বুঝতে পারছে না যে এই পরিস্থিতিতে সে কী করবে বা কীভাবে তার বাবা-মাকে বিষয়গুলো জানাবে। সে এতটাই মানসিক চাপ বোধ করছে যে সে পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছে না।

এখানে সমস্যা বা ঝুঁকিটি কী?

……………………………………………………………………………………………………………

……………………………………………………………………………………………………………

কেন এই সমস্যা বা ঝুঁকিটি হচ্ছে?

……………………………………………………………………………………………………………

……………………………………………………………………………………………………………

সমস্যা বা ঝুঁকিটির ফলে কী কী শারীরিক বা মানসিক প্রভাব পড়ছে?

……………………………………………………………………………………………………………

……………………………………………………………………………………………………………

……………………………………………………………………………………………………………

ঘটনা ২

শোভন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। সে তার সহপাঠীদের তুলনায় দেখতে মোটা ও লম্বা। তার সহপাঠীরা সব সময় তাকে নিয়ে হাসাহাসি করে, তাকে বিদ্রূপ করে। তাকে বিভিন্ন প্রাণির সাথে তুলনা করে ও ব্যঙ্গাত্মক নামে ডাকে। এমনকি তারা তাকে খেলায় নেয় না, তাদের সাথে মিশতে গেলে তারা তাকে গুরুত্ব দেয় না, এড়িয়ে চলে। শোভনের এই বিষয়গুলো নিয়ে খুব মন খারাপ থাকে। তার নিজেকে খুব ছোট মনে হয়, খুব একা আর অসহায় লাগে। ধীরে ধীরে তার আত্মবিশ্বাস কমে যাচ্ছে, সে সবকিছুতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে ও হতাশ হয়ে পড়ছে। সে পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছে না। আজকাল তার কারও সাথে মিশতেও খুব ভয় হয়।

এখানে সমস্যা বা ঝুঁকিটি কী?

……………………………………………………………………………………………………………

……………………………………………………………………………………………………………

কেন এই সমস্যা বা ঝুঁকিটি হচ্ছে?

……………………………………………………………………………………………………………

……………………………………………………………………………………………………………

সমস্যা বা ঝুঁকিটির ফলে কী কী শারীরিক বা মানসিক প্রভাব পড়ছে?

……………………………………………………………………………………………………………

……………………………………………………………………………………………………………

……………………………………………………………………………………………………………

ঘটনা ৩

রাফির বয়স ১২। ওরা দুই ভাই বোন রাফি আর মনিকা। মনিকা বড়। মনিকা কিছুদিন আগে বিদেশে চলে যায়। ওখানে পড়াশোনা করছে। রাফি সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। বোনের সাথে রয়েছে বয়সের ব্যবধান। বোন বিদেশে চলে যাওয়াতে কেমন চুপচাপ হয়ে যায়। বোন বিদেশ থেকে মোবাইল পাঠায়। লকডাউনে স্কুল বন্ধ হবার পর আরো একা হয়ে যায় রাফি। মা ঘরের কাজ নিয়ে ব্যস্ত। বাবা ব্যবসার কাজে ব্যস্ত থাকে বেশি। এই সব ভালো লাগে না রাফির। ইদানিং অনলাইনে কিছু বন্ধুর কাছ থেকে গেম খেলা শিখেছে। সারাদিন সারারাত মোবাইলে গেম খেলে। খাওয়া, ঘুম, সামাজিকতা কিছুই নেই। মোবাইলে যদি চার্জ না থাকে তাতে সে উদ্বিগ্ন হয়। রুম থেকে বের হয় না। একটা রুমেই বন্দি করে ফেলেছে সে নিজেকে। অসম্ভব মেজাজ হয়েছে তার। সব কিছু কেড়ে নিয়েছে এই মোবাইল যন্ত্রটি। রাফির বাবা-মায়ের মতে সব কিছুর। মূলে এই মোবাইল এবং তার প্রতি আসক্তি।

এখানে সমস্যা বা ঝুঁকিটি কী?

……………………………………………………………………………………………………………

……………………………………………………………………………………………………………

কেন এই সমস্যা বা ঝুঁকিটি হচ্ছে?

……………………………………………………………………………………………………………

……………………………………………………………………………………………………………

সমস্যা বা ঝুঁকিটির ফলে কী কী শারীরিক বা মানসিক প্রভাব পড়ছে?

……………………………………………………………………………………………………………

……………………………………………………………………………………………………………

……………………………………………………………………………………………………………

ঘটনা ৪

সেলিনার বয়স ১১। সামনে এর প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা। বাবা-মায়ের স্বপ্ন মেয়ে অনেক বড় হবে। তাই কড়া শাসনে রাখে। পড়ার জন্য অনেক চাপ দেয় ওকে। সবার চেয়ে ভালো করতে হবে ওর। স্কুল আর কোচিং এই নিয়েই ওর জীবন। খেলাধুলার সুযোগ নেই। স্কুলের পরীক্ষায় সবার চেয়ে ভালো করতে না পারলে বাবা-মা শাসন করেন। অথচ ওর বন্ধুদের সাথে প্রতিযোগিতা করতে ভালো লাগে না। সেলিনার এখন পড়ার কথা ভাবলেই বিরক্ত লাগে। পরীক্ষার কথা ভাবলেই টেনশন হয়। ঘাম হয়। হতাশ লাগে, ঘুম আসে না। ওর ইচ্ছে করে সব ছেড়ে দিয়ে দূরে কোথাও চলে যেতে।

এখানে সমস্যা বা ঝুঁকিটি কী?

……………………………………………………………………………………………………………

……………………………………………………………………………………………………………

কেন এই সমস্যা বা ঝুঁকিটি হচ্ছে?

……………………………………………………………………………………………………………

……………………………………………………………………………………………………………

সমস্যা বা ঝুঁকিটির ফলে কী কী শারীরিক বা মানসিক প্রভাব পড়ছে?

……………………………………………………………………………………………………………

……………………………………………………………………………………………………………

……………………………………………………………………………………………………………

 

  • এবার এই ঝুঁকিগুলোর আলোকে ভাবি, আমার নিজের জীবনে কি এগুলোর কোনোটার মুখোমুখি হয়েছি? এসব ঝুঁকির বাইরেও আর কী ঝুঁকি আমার বা আমার কমিউনিটিতে থাকতে পারে বলে মনে করছি? সেই ঝুঁকিগুলো আমি কীভাবে বুঝব? এই ঝুঁকির ফলে আমার ওপর বা কমিউনিটিতে কী প্রভাব পড়তে পারে? শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন। এবার আমার নিজের ভাবনা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে ৩টি ঝুঁকির কথা ভাবি। বাবা-মা বা কমিউনিটির বিশ্বস্ত কার সাথেও এ নিয়ে আলোচনা করতে পারি। এরপর নিচের ছকটি পুরণ করি।

আমি কী কী ঝুঁকির মুখোমুখি হতে পারি

ঝুঁকিগুলো আমি কীভাবে বুঝব

ঝুঁকিগুলো আসার আগেই সতর্ক হওয়া বা এলে মোকাবিলা করা কেন জরুরি

১.

 

 

  

২.

 

 

  

৩.

 

 

  

 

ঝুঁকি মোকাবিলায় সেবামূলক প্রতিষ্ঠান।

  •  সম্পর্কের ঝুঁকি নিরসনে বিশ্বস্ত আন্তঃসম্পর্ক ভূমিকা রাখতে পারে। পাশাপাশি প্রয়োজন হলে রয়েছে নানা রকম সেবা প্রতিষ্ঠান। সেগুলো সরকারি, বেসরকারি, এনজিওভিত্তিক হতে পারে। যেমন: থানা, সমাজসেবা অফিস, হাসপাতাল, তথ্যসেবা প্রতিষ্ঠান, কিশোর-কিশোরী স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান, নানা ধরনের সেবামূলক ক্লাব ইত্যাদি। এছাড়াও রয়েছে ১৯৯ জরুরি সেবা এবং শিশু সুরক্ষাবিষয়ক নম্বর: ১০৯৮। এই নম্বরে ফোন করলে যেকোনো ঝুঁকি মোকাবিলায় সাথে সাথে সাহায্য পাওয়া যায়। এগুলো মিলেই আমাদের সেবাকাঠামো। আমরা শ্রেণিকক্ষে এই সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। পাশাপাশি ইন্টারনেট খুঁজে বা কমিউনিটির দু'একজন সেবাকর্মীর সাথে কথা বলি। সেই আলোচনা আলোকে আমাদের এলাকার সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি মানচিত্র আঁকি। আমারা মানচিত্রের নমুনাও দেখেছি। নিচে তেমন একটি নমুনা দেওয়া হলো। সেগুলো অনুসরণ করে বা নিজের মতো করে আঁকি।


  • সম্পর্কের যত্নে খুঁজে পাই রত্ন # খুব সুন্দরভাবে আমরা মানচিত্র এঁকে আমার এলাকার সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো চিহ্নিত করেছি। এগুলোতে। আমরা হয়তো সরাসরি গিয়ে সেবা নিতে পারি। এরকম ৫টি সেবা প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা, ফোন নং এবং ই-মেইল এড্রেসের তালিকা নিচের ছকে পুরণ করি। প্রয়োজনে শিক্ষকের সাহায্য নিই, ইন্টারনেটে খোঁজ করি বা কমিউনিটির দু'একজন সেবাকর্মীর সাথে কথা বলি।

আমার এলাকার সেবা প্রতিষ্ঠানের নাম

ঠিকানা

ফোন

ই-মেইল (যদি থাকে)

    
    
    
    
    
    
    
    
    
  • আবার কিছু সেবা প্রতিষ্ঠান আছে যেগুলো বেশ দূরে। হয়তো জেলা সদরে, অন্য জেলায় বা রাজধানীতে। তাই আমাদের পক্ষে সরাসরি যাওয়া কঠিন। কিন্তু হয়তো ফোন বা ই-মেইলে যোগাযোগ করে সেবা পাওয়া সম্ভব।

 

বিষয় সম্পর্ক ও সেবা প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে আমার ঝুঁকি বা চ্যালেঞ্জ নিরসনের

  • আমরা ইতিমধ্যে আমাদের সম্পর্কের সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো চিহ্নিত করেছি। ঝুঁকির লক্ষণ ও প্রভাবগুলোও ভেবে বের করে লিখেছি। বিশ্বস্ত সম্পর্ক ও সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোও আমাদের জানা হয়ে গেছে। এবার আমরা ভেবে বের করব ঝুঁকি নিরসনের উপায়। এ কাজে কীভাবে বিশ্বস্ত সম্পর্ক কাজে লাগাব, কীভাবে সেবা প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নেব সেগুলো আমরা ভেবে বের করব। মনে রাখব, সব সময়ই যে সেবা প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিতে হবে তা নয়। অনেক ঝুঁকি বিশ্বস্ত সম্পর্কের সাহায্য নিয়েই দূর করা যায়। অর্থাৎ আমাদের যেই যেই আসল রত্নগুলো আছে, সেই রত্ন ব্যবহার করে কীভাবে নকল রত্ন থেকে দূরে থাকব সেটাই এবার আমরা জানব। শ্রেণিতে ইতিমেধ্যে শিক্ষক আমাদের নিয়ে আলোচনা করেছেন। সেই আলোচনার আলোকে নিচের পরিকল্পনা ছকটি পূরণ করি।

ভূমিকাভিনয়ে খুঁজে পাই সমাধান

  • আগের দুটি সেশনে আমরা ঝুঁকি নিরসনে ব্যক্তিগত পরিকল্পনা করেছি। সেই পরিকল্পনা কাজে লাগিয়ে দলে ভাগ হয়ে শ্রেণিতে ভূমিকাভিনয় করেছি। যেই ৪টি ঝুঁকি নিয়ে ঘটনা বিশ্লেষণ করেছিলাম, সেই। ৪টি ঘটনার ওপর ভূমিকাভিনয় করেছি। ভূমিকাভিনয়ে আমরা বিশ্বস্ত সম্পর্ক ব্যবহার ও সেবা প্রতিষ্ঠান। ব্যবহারের (যদি প্রয়োজন হয়) অভিনয় করে দেখিয়েছি। এবার ভূমিকাভিনয়গুলোর আলোকে ঘটনা ৪টির জন্য নিচের অংশগুলো পূরণ করি।

 

ঘটনা ১-এর আলোকে করা নাটিকা/ভূমিকাভিনয়ের ওপর প্রতিফলন:

  •  আমি/আমার সহপাঠীরা ঝুঁকিটি নিরসনে নাটিকা/ভূমিকাভিনয়ে কীভাবে বিশ্বস্ত সম্পর্কের সাহায্য নিয়েছি/ নিয়েছে

…………………………………………………………………………………………………………………………….

…………………………………………………………………………………………………………………………….

  •  আমি/আমার সহপাঠীরা ঝুঁকিটি নিরসনে নাটিকা / ভূমিকাভিনয়ে কোন সেবা প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিয়েছি/ নিয়েছে (যদি প্রয়োজন হয়)

…………………………………………………………………………………………………………………………….

…………………………………………………………………………………………………………………………….

 

ঘটনা ২-এর আলোকে করা নাটিকা/ভূমিকাভিনয়ের ওপর প্রতিফলন:

  •  আমি/আমার সহপাঠীরা ঝুঁকিটি নিরসনে নাটিকা / ভূমিকাভিনয়ে কীভাবে বিশ্বস্ত সম্পর্কের সাহায্য নিয়েছি নিয়েছে

…………………………………………………………………………………………………………………………….

…………………………………………………………………………………………………………………………….

  • আমি/আমার সহপাঠীরা ঝুঁকিটি নিরসনে নাটিকা / ভূমিকাভিনয়ে কোন সেবা প্রতিষ্ঠানের কাঠামোর সাহায্য নিয়েছি/ নিয়েছে (যদি প্রয়োজন হয়)

…………………………………………………………………………………………………………………………….

…………………………………………………………………………………………………………………………….

 

ঘটনা ৩-এর আলোকে করা নাটিকা/ভূমিকাভিনয়ের ওপর প্রতিফলন:

  •  আমি/আমার সহপাঠীরা ঝুঁকিটি নিরসনে নাটিকা / ভূমিকাভিনয়ে কীভাবে বিশ্বস্ত সম্পর্কের সাহায্য নিয়েছি/ নিয়েছে

…………………………………………………………………………………………………………………………….

…………………………………………………………………………………………………………………………….

 

  • আমি/আমার সহপাঠীরা ঝুঁকিটি নিরসনে নাটিকা/ ভূমিকাভিনয়ে কোন সেবা প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিয়েছি/ নিয়েছে (যদি প্রয়োজন হয়)

…………………………………………………………………………………………………………………………….

…………………………………………………………………………………………………………………………….

 

ঘটনা ৪-এর আলোকে করা নাটিকা/ভূমিকাভিনয়ের ওপর প্রতিফলন:

  •  আমি/আমার সহপাঠীরা ঝুঁকিটি নিরসনে নাটিকা/ভূমিকাভিনয়ে কীভাবে বিশ্বস্ত সম্পর্কের সাহায্য নিয়েছি/নিয়েছে

…………………………………………………………………………………………………………………………….

…………………………………………………………………………………………………………………………….

  • আমি/আমার সহপাঠীরা ঝুঁকিটি নিরসনে নাটিকা/ ভূমিকাভিনয়ে কোন সেবা প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিয়েছি/ নিয়েছে (যদি প্রয়োজন হয়)

…………………………………………………………………………………………………………………………….

…………………………………………………………………………………………………………………………….

  • এই ভূমিকাভিনয়ের অভিজ্ঞতাটি আমাদের ব্যক্তিগত পরিকল্পনার লিখনটিকে আরও দৃঢ় করেছে। আমরা নিশ্চয়ই এখন বুঝতে পারছি বিশ্বস্ত সম্পর্কগুলোই আমাদের আসল রত্ন। এগুলোর সাহায্য নিতে পারলে ভালো থাকা যায়, ঝুঁকি কমানো যায়।

 

বিশ্বস্ত সম্পর্ক আরও সুন্দর করায় আমার ব্যক্তিগত চর্চা

গত ১২টি সেশনে আমরা গুপ্তধন খোঁজা, আসল রত্ন জানা, সেই রত্নগুলোকে ব্যবহারের উপায় বের করেছি। সবচেয়ে নিরাপদ ও বিশ্বস্ত সম্পর্কগুলোই হলো আমার আসল রত্ন। সামনের দিনগুলোতে এই বিশ্বস্ত সম্পর্ককে আরও ভালো করার চর্চা করব। আমরা ইতিমধ্যে আমাদের বিশ্বস্ত সম্পর্কের ছবি এঁকেছি। এবার সেখান থেকে ১-২টি বিশ্বস্ত সম্পর্ককে বেছে নিই। সম্পর্কগুলো আরও ভালো করার ক্ষেত্রে আমরা কী করতে পারি তা চিহ্নিত করেছি। প্রয়োজন হলে শিক্ষক ফিডব্যাক দিয়ে। পরিকল্পনাটিকে আরও ভালো করায় সাহায্য করবেন। সামনের এক মাস বিশ্বস্ত সম্পর্ক উন্নয়নের চর্চাসংক্রান্ত ঘটনাগুলোর বিবরণ ডায়েরি বা জার্নালে লিখে রাখব। এই সময়ে কোনো ঝুঁকির মুখোমুখি হলে বিশ্বস্ত সম্পর্কের সাথে কীভাবে শেয়ার করেছি, মতামত নিয়েছি সেগুলোও ডায়েরি বা জার্নালে লিপিবদ্ধ করব। এ ব্যাপারে শিক্ষক দরকার হলে আরও নির্দেশনা দেবেন। নিচের ছকের মতো করে বা আমার যেভাবে পছন্দ সেভাবে ডায়েরি বা জার্নালে লিপিবদ্ধ করে এক মাস পর শিক্ষকের কাছে জমা দেব।

 

তারিখ 

বিষয় সম্পর্ক উন্নয়নের চর (কোনো ঝুঁকি মোকাবিলার বিখত সম্পর্কের সাহায্য: নিয়ে থাকলে সেটির বিবরণ)

এটি আমার পরিকল্পনা অনু কোনো কাজ/ লক্ষ্যটি অর্জনে ভূমিকা রয়েছে 

 

 

 

 

 

 

  

 

 

 

 

 

 

 

  

সেশনগুলোতে অংশগ্রহন করে সফলভাবে ট্রেজার হান্ট বা রত্ন খুঁজে বের করে আনার জন্য অভিনন্দন । 

 

আমার অগ্রগতি , আমার অর্জন 

নিচের ছকগুলো শিক্ষক পূরণ করবেন। এর মাধ্যমে আমার অগ্রগতি সম্পর্কে শিক্ষক ধারণা দেবেন। উৎসাহ দেবেন। কীভাবে আরও ভালো করতে পারি সেই উপায় জানাবেন। শিখন কার্যক্রমের উপর ভিত্তি করে আমার কাজগুলোর মান অনুযায়ী নিম্নলিখিতভাবে স্টার (তারকা চিহ্ন) দিয়ে মূল্যায়ন করবেন।

খুব ভালো ★★*★ ভালো ★★ আরও ভালো করার সুযোগ আছে- 

 

 

Content added By
Promotion